"অবাক হাজী"
রচনায়ঃ মোঃ আলমগীর হোসেন
২৫.০১.২০২১ ইং।

ধনী লোকে হজ্জ না করলে
ঈমান আমান শেষ;
হারাম টাকায় ধনী লোকের
হজ্জ হবে কি বেশ?

ছয়শো টাকা রোজের চাকরি,
উত্তরাতে বাড়ি;
এই ধরনের লোককে কি কেউ
ধনী বলতে পারি?

এই ধরনের লোকে যদি
ফি বছর হজ্জ করে,
হাজী নামক ডিগ্রি ছাড়া
হজ্জ আসে না ঘরে।

মাদক ব্যবসা করে যদি
ধনী কেহ হয়,
এই ধরনের ধনী লোকের
হজ্জ কখনো নয়।

হোক অফিসার, ইঞ্জিনিয়ার,
ঘুষের টাকা খেলে;
প্রতি বছর হজ্জ করেও
টাকা যাবে জলে।

কমিশনের টাকায় যদি
ডাক্তারে হজ্জ করে,
এমন হাজীর ডাক কখনো
যায় না প্রভুর ঘরে।

বৈধ টাকার ধনী যদি
যাকাত গিলে খায়,
এসব হাজীর নিতে হবে
গরীব মারার দায়।

এমন অনেক ধনী আছে
ভাইয়ের খোঁজ রাখে না;
প্রতিবেশী অনাহারে,
দেখেও দেখে না।

আত্মীয়দের হক না দিয়ে
ধনী লোকের হজ্জ
নিশ্চয়ই তা জমা ধরে না
মহাকালের জজ।

এসব হাজীর মর্যাদা এই
দুনিয়াতে শেষ!
হারাম টাকায় ধনী লোকের
হজ্জ হবে কি বেশ?

"গোলামি"
রচনায়ঃ মোঃ আলমগীর হোসেন
২৬.০১.২০২১ ইং।

গোলাম করবে গোলামগিরি,
মালিক দিবে মায়না;
সঠিকভাবে কাজ করিলে
পূরণ হবে বায়না।

আয়না দিয়ে মুখ দেখেছো?
আসল ছবি ফোঁটে ;
কাজে ফাঁকি, জলে আঁখি,
বেতন নাহি জোটে।

ঠোঁটে ঠোঁটে জিকির পড়,
আল্লাহ আমার রব;
সুদে, ঘুষে মানুষ চুষে
আয় যে তোমার সব।

জপ করিছ তছবি হাতে,
আল্লাহ ক্ষমা কর;
দাড়ি, কমা না মেনে কি
বইয়ের পাতা পড়?

আল্লাহ বড়! অনেক বড়!!
সুক্ষ্ণ বিচারক!!!
হালাল পথে না থাকিলে
নিশ্চয়ই হবে ঠক।

বক দেখেছ? বকের পালক
দুধের চেয়ে সাদা;
কাঁদা জলে মাছ ধরে খায়,
গায়ে নাহি কাঁদা।

আদা খেয়ে দাহ্য সয়ে
হজম করে যিনি;
অম্ল কি আর তাহার পেটে
বাসা বাঁধে শুনি?

জ্ঞানী, গুণী, মহা মুনি,
যত বুদ্ধিমান ;
আগে, পাছে স্বীকার করে
আল্লাহ মহীয়ান।

স্নান করলে নদীর জলে
দিনে পঞ্চবার,
তার গায়ে কি ময়লা থাকে
ভাব তো একবার?

আবার ভাব, বারবার ভাব,
খুলে চোখের আয়না ;
গোলাম করবে গোলামগিরি,
মালিক দিবে মায়না।

"সফরের কথা"
রচনায়ঃ মোঃ আলমগীর হোসেন
২৭.০১.২০২১ ইং।

গতকালকে সিলেট ছিলাম,
আজকে আছি নাটোরে;
আল্লাহ্ আমায় দয়া করে
ঘুরাইলো যে কতো রে!

আল্লাহ্ আমায় দয়া করে
ঘুরাইলো মোর পুরো দেশ;
এই কারণে প্রভুর প্রতি
কৃতজ্ঞতার নেই কো শেষ।

ঘুরাঘুরি প্রভুর আদেশ,
সবাই ঘুরতে পারে না;
ঘুরাঘুরি না করিলে
জ্ঞান গরিমা বাড়ে না।

এক এলাকার একেক রীতি,
ভিন্ন লোকের কথার সুর;
প্রভুর কতো গুণাবলি,
আর যেওনা বেশি দূর!

কেহ বলে আসোরে বা,
কেহ বলে আউক্কা;
কেহ বলে বসো বসো,
কেহ বলে বউক্কা।

পানিরে কেউ হানি বলে,
বানানে ভুল করে না!
কেহ আছে ঘরে থেকে
বলে আমি ঘরে না!

ক্ষুধা ক্ষুধা বলে কেহ
ভিক্ষা করে সারাক্ষণ;
ক্ষুধা তো তার পেটে নহে,
ক্ষুধাতে তার ভরা মন।

এক পাগলে টাকা গোনে,
কাছে গেলাম দেখতে;
কতো টাকায় কয়টা বিড়ি?
পেলাম তখন শিখতে!

এক মসজিদে গিয়ে দেখি
সালাম শেষে হইচই;
কার মোবাইলে ফোন বেজেছে?
নামাজ তুমি পড়লে কই!

কোথাও বা গিয়ে দেখি
মাহফিলে ঠাঁই নাই;
একটু পরে নামাজ শুরু,
কয়েকজন লোক দেখতে পাই!

কোথাও বা গিয়ে দেখি
নেশা চলে মাজারে!
ফরমালিনের দাপটে আজ
মাছি নাহি বাজারে।

কোথাও বা দেখে এলাম
হাজী সাবে সুদ খায়;
দাড়ি, টুপি, তছবি হাতে;
তবু সাবে ঘুষ চায়!

কাউকে দেখি দুধ বেচে সে
মদ কিনে খায় আরামে,
একেক রকম ভাষা দেখি
একেক রকম গেরামে।

কেহ খুশি জুয়া খেলায়
লুডু, দাবা, কেরামে।
আল্লাহ্ তো চাহে না কভু
আমরা থাকি ব্যারামে।

কেহ আছে সিলেট থেকে
ফোনে বলে নাটোরে!
কেন মানুষ উল্টো দিকে,
বাঁকা পথে হাঁটোরে?

"ভাগাভাগি"
রচনায়ঃ মোঃ আলমগীর হোসেন
২৯.০১.২০২১ ইং।

চাচা আর ভাতিজা মিলে
ধরে প্রায়ই কিছু মাছ;
দুই ভাগ করে চাচায় বলে,
ভাতিজা কোনটা চাস?

বিনীতভাবে ভাতিজা বলে,
আপনি যেটা দেন;
যেই ভাগটা ভালো লাগে,
সেটাই আপনি নেন।

যেই ভাগটা বড় ছিল,
চাচায় নিলো সেটা;
মাছ না খেলে কি হবে আর,
বুঝছিস নাকি বেটা?

তাছাড়া তো আমার জীবন
হবে হবে শেষ;
তোমার অনেক সময় আছে,
খেতে পারবে বেশ।

আজকে আমি বেশি নিলাম,
তুমি নিও কাল;
প্রতিবারই ভাগের সময়
চাচার এমন তাল!

এইভাবে কিছু দিন গেলে
ভাতিজা হয় রাগ;
বিনীতভাবে চাচাকে বলে,
আমি করবো ভাগ।

চাচা এবার রেগে সাবার,
উত্তেজিত খুব;
উচ্চস্বরে ধমকে বলে,
ভাতিজা তুই চুপ।

ছোট থেকে কোলে-কাখে
বড় করেছি তোকে;
এখনই তোর মাছের লোভে
পর্দা পড়েছে চোখে?

ভাতিজা বলে, ন্যায়ের স্বার্থে
বলেছি এমন কথা;
দয়া করে উচিৎ কথায়
নিবেন না চাচা ব্যথা।

বেশি নিয়ে ঋণি হবেন,
চাই না আপনার কাছ;
চাচা আর ভাতিজা মিলে
ধরে প্রায়ই কিছু মাছ।

"চির সত্য"
রচনায়ঃ মোঃ আলমগীর হোসেন
৩০.০১.২০২১ ইং।

পাক কুরআনের পাতায় পাতায়
কথায় কথায় সত্য;
সারা জাহান জুড়ে আছে
আল্লাহরই প্রভুত্ব।

মনোযোগে বুঝে পড়লে
দূর হয়ে যায় ভ্রান্তি;
অনুসরণ করলে ইহা
আদ্যোপান্ত শান্তি।

ইহা শুধু নহে কেবল
মুসলমানের জন্য;
যারা ইহা মেনে চলবে,
হয়ে যাবে ধন্য।

পড়ার জন্য পড়া নহে,
পড়তে হবে বুঝে;
ইহার আসল নির্যাসটুকু
নিতে হবে খুঁজে।

সব ধরনের বিধিনিষেধ
সরল ভাষায় লেখা;
অধিকাংশ মানুষেরই
হয়নি ইহা শেখা।

না বুঝেই বহুত মানুষ
করে ইহার হেলা;
আফসোস করে শেষ হবে না
চলে গেলে বেলা।

ওরে মনি, জ্ঞানের খনি
পবিত্র কুরআন;
মহান প্রভুর পক্ষ থেকে
নিজস্ব বয়ান।

স্রষ্টা চাহে সৃষ্টিকূলের
সহজ সরল পথ;
কুরআন হলো সরল পথের
সঠিক অভিমত।

জন্ম থেকে শুরু করে
মৃত্যু হওয়ার আগে;
সকল তথ্য দেওয়া আছে,
যা লাগে যার ভাগে।

রাজার আসন, রাজ্য শাসন,
প্রজার অধিকার;
নির্দেশ আছে সবার প্রতি
করতে সুবিচার।

জমি জমার বাটোয়ারা,
আয় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে
অবৈধ পথ বেছে নিলে
শাস্তি ছত্রেছত্রে।

অসহায় ও দরিদ্রদের
যে করবে না দান;
তার রয়েছে অশেষ শাস্তি,
বলেছে কুরআন।

মালে ভেজাল, দলিলে জাল,
পরের ক্ষতি করে
লাভ হবে না সেজদা দিয়ে
আল্লাহুর দরবারে।

সুদ, জেনা আর ঘুষের
প্রতি আল্লাহ্ খুবই রাগ;
এই চরিত্রের কোন লোকের
জান্নাতে নাই ভাগ।

আল্লাহ্ নহেন পক্ষপাতী,
সমান সবার জন্য;
দয়ার ভান্ডার আবার তিনি
নিঠুর বলে গন্য।

তিনি মহান, তিনি মহান,
তাঁর চেয়ে মহান নাই;
কুরআন পড়ে আমরা সবাই
এই হেদায়েত পাই।

লিখে কভু শেষ হবে না
আল্লাহুর কৃতিত্ব;
পাক কুরআনের পাতায় পাতায়
কথায় কথায় সত্য।